প্রকাশিত: Thu, May 30, 2024 12:14 PM
আপডেট: Tue, Apr 29, 2025 11:31 PM

দ্বিতীয় অ্যাসাঞ্জের আবির্ভাব, আজেকজান্দ্রা এলবাকিয়ান এখন সব রাষ্ট্রনায়কের চক্ষুশূল

দেবদুলাল মুন্না: কাজাখিস্তানের এ মেয়েটি চান তিনি যা জানেন তা জানুক জগতের সবাই। মানে জ্ঞান বিনিময় হোক। তথ্য বিনিময় হোক। জ্ঞান, তথ্য জানার অধিকার সবার রয়েছে। এখন বিভিন্ন দেশে তথ্য অধিকার দেওয়ার কথা বলা হলেও অফিসেয়েল সিক্রেট আইনে আবার তা দেওয়া হয় না। কিন্তু এ মেয়েটি সেসবের তোয়াক্কা না করে একটা সার্চ ইঞ্জিন খুললেন। সেই নাম পরে বলছি। 

আগে মেয়েটির নাম বলি , আজেকজান্দ্রা এলবাকিয়ান। এই সাইট তিনি খুলেছিলেন ২০১১ সালে। এতোদিন বিশেষ কেউ জানতো না। ততো সাড়াও ফেলেনি। ২০২০ সালের ২৮ এপ্রিল মার্কস এর জন্মদিন উপলক্ষে তিনি তার সাইটে স্লাভায় জিজেকের একটি ভাষণ আপ করলেন। সেই হয়ে গেল খবর। তাকে গুম করে ফেলার হুমকি। পুলিশি হ্যারাসমেন্ট। পরে জামিনে পেল মুক্তি। এখন রয়েছেন গোপন জীবনে। স্পুটনিক খবর করেছে তাকে নিয়ে , তিনি কম্যুনিস্ট। তার নামে ওয়ারেন্ট জারি।

তিনি পড়াশোনা করেছে সাতবায়েভ কাজাখ ন্যাশনাল টেকনিকাল ইউনিভার্সিটিতে। রয়েছেন বিভিন্ন দেশের গোপনীয় তথ্য এ সাইটে। তার পরিণতি জুলিয়ান এসাঞ্জের মতোই হতে পারে ভবিষ্যতে। কারণ তিনি এরিমধ্যে পুতিনের যেমন, তেমনই আমেরিকারও চক্ষুশূল।

তিনি এক পলাতক জীবনযাপন করছেন। তার লুক বারবার চেঞ্জ করছেন। এক শহর থেকে অন্য শহরে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ইন্টারপোল খুঁজছে তাকে। কিন্তু তার শেষ কথা ছিল, স্পুটনিককে দেওয়া এক ভিডিও ইন্টারভিউতে, যদি মরতে হয়, তবে চেগুয়েভারার মতো মরব। তবে জ্ঞান ও তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত করার কাজটা চালিয়েই যাবো। 

সাইবার সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টে এমন একটিও বোদ্ধা নেই যে অন্তর্জালের গতিপ্রকৃতি আলেকজান্দ্রার থেকে বেশি জানে, নইলে তাদের এবং এতোগুলো প্রকাশকের সিকিউরিটি সিস্টেমের চোখে ধুলো দিয়ে পেপারগুলো তিনি বের করে আনতে পারতেনই না। আবার ক্যাপিটালিস্ট শিল্পীকে আন্ডারএস্টিমেট করলো। আলেকজান্দ্রা অলটারনেটিভ ডোমেইনে শিফট করতে থাকেন অনবরত এবং একাধিক ডোমেন থেকে সাইটটা আজও তিনি চালাচ্ছেন। ড্যামেজ ফাইন ধার্য হয় ১.৫ কোটি মার্কিন ডলার। সেই থেকে আলেকজান্দ্রা আন্ডারগ্রাউন্ডে। তার বর্তমান সাকিন-ঠিকানা কেউই জানে না। আমি আগেই আরেকজনকে কোট করে বলেছিলাম, এঁকে “ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজার” বলতে পারেন, বা বলতে পারেন “নিঃস্বার্থ মানবহিতৈষিণী”। এর পরে আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি, স্প্রিঙ্গার, জন উইলি আর কেম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেসও ল-স্যুট এনেছে সাইহাবের বিরুদ্ধে। সাইহাব ডোমেন বদলেছে অনবরত। বাঘা বাঘা রাষ্ট্রনায়করা তাকে খুঁজছে। তিনি কোথায় ? কেউ জানেন না।  তবে সাইট চলছে। কাজও চলছে। ফাঁস করে যাচ্ছেন গোপন তথ্য।

১৩ কোটি একাডেমিক পেপার অনলাইনে আছে তার সাইটে। বিনামূল্যে ডাউনলোডের জন্য।